top of page

স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র "ভারত-বাদ"


-ভাগবত ভট্টাচার্য


(1) আমরা ভারতবাসী। আমরা, আমাদের দেশকে মা বলি 'অর্থাৎ "ভারত-মাতা"। সেই অর্থে, আমরা সবাই ভারত-মাতার সন্তান। যে কোনো মায়ের কাছে, প্রতিটি সন্তানই যেমন, সমান গুরুত্ব পূর্ন,। ঠিক তেমনি, ভারতমাতার কাছেও তার প্রতিটি সন্তানই সমান গুরুত্বপূর্ন। সমান আদর। সমান সম্মান। সমান অধিকার। সমান মর্যাদা। খাদ্য পানীয় বস্ত্র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্ম বিনোদন ইত্যাদি সুখ ও সাচ্ছন্দ পাওয়ার সমান অধিকারী। আশাকরি এই বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই। এখন প্রশ্ন হলো? আসল, বাস্তব সত্যটা কি? ভারত-মাতার সন্তান হিসেবে,আমরা তো প্রত্যেকেই পরস্পর পরষ্পরের ভাই অর্থাৎ এক জাতি। কিন্তু, আমরা কি সত্যিই তাই? সত্যিই কি আমরা একজাতি!একপ্রাণ!ভারতমাতার সন্তান?" আমরা! এবং আমাদের শাসকগোষ্ঠী এই ভারত-মাতা শব্দটা কি সত্যিই মানি? বা মানে? আমাদের সংবিধান! বাস্তবে কি, এই কথাটার আসল অর্থ মেনে লেখা হয়েছে? যদি,সত্যিকারের ভারতবাসীকে ভারত-মাতার সন্তান বিবেচনা করা হতো! তাহলে সংবিধান কখনোই "গণ-তন্ত্রের "নামে "দল-তন্ত্র" প্রতিষ্ঠা করার পথ সুগম করতো না। আমাদের সংবিধান আমাদের এক হতে দেয় নি। স্বাধীন গণতন্ত্রের নামে, বিভিন্ন দলে ভাগ করে দিয়েছে। অর্থাৎ ভাইয়ে ভাইয়ে বিভেদ করে দিয়েছে। যেমন -A দল,B দল, C দল,D দল ইত্যাদি অসংখ্য দল। আর (অনস্বীকার্য বাস্তব সত্য) দল, মানেই গোষ্ঠী, বিভেদ। দল মানেই প্রতিস্পর্ধা। সমস্ত দেশবাসীকে যদি "ভারত-মাতার সন্তান" বিবেচনা করা হতো তাহলে দল শব্দটা সংবিধানে উল্লেখ করা হতো না। ভারতবর্ষ হতো "দলহীন "স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এই দলহীন স্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকার কি ভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায়?


(2) স্বাধীনতা এই "স্বাধীনতা" শব্দটি প্রতিটি প্রাণী এবং প্রতিটি মানুষের কাছে, অত্যন্ত কাঙ্খিত শব্দ। এই স্বাধীনতা যুগ, যুগ ধরে প্রতিটি মানুষ এবং মানবজাতি কামনা করে আসছে! কিন্তু! বাস্তবে!, প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে, আজ পর্যন্ত্য মানব-জাতির মধ্যে সাধারণ এবং অতি-সাধারণ শ্রেণীর মানুষ কখনো, কোনো দিনই এই কাঙ্খিত স্বাধীনতা পায় নি,আজও পায় না,পক্ষান্তরে আমরাও পাই নি। মানব সভ্যতা শুরুর আগে থেকেই সাধারণ মানুষ শক্তি ও শক্তিমানের কাছে স্বাধীনতা হারিয়ে শক্তিমানের দাসত্ব স্বীকার করেছে। সুদূর অতীতে, দৈহিক শক্তিতে, বলীয়ান্ ব্যক্তির, পরে দল বা গোষ্ঠী-দলপতির অধীন হয়েছে। তারপর, গোষ্ঠি থেকে,সৃষ্টি হয়েছে---- রাজা,মহারাজা,জমিদার। কালক্রমে এসেছে শক্,হুণ, মোগল, পাঠান, এসেছে ইংরেজ। এদের সবার শক্তির কাছেই আমরা,সাধারণ মানুষেরা অধীনতা স্বীকার করে, পরাধীন হয়েছি। তারপর একে, একে এবং সবার শেষে 1947 ইং সালে বিদেশী ইংরেজ তাড়িয়ে, আমাদের দেশ, তথা ভারত-মাতা স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু আমরা? সাধারণ মানুষরা? আমরা কি সত্যিই স্বাধীনতা পেয়েছি?? না। পাইনি। আমরা সাধারণ মানুষেরা, চিরদিনই গোলাম ছিলাম। আজও সেই গোলাম-ই আছি। চিরদিন-ই "স্বাধীনতা" ভোগ করেছে,এবং আজও করে চলেছে,সেই শক্তিমান দলপতি, সেই, শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের বশংবদেরা। এখানে প্রশ্ন আসতে পারে, - দলহীন গণতন্ত্রে কি, সবাই স্বাধীনতা পাবে? সেখানেও তো নেতা থাকবে, সরকার তথা শাসকগোষ্ঠী থাকবে! হ্যাঁ। অবশ্যই থাকবে। আর দলহীন গণতন্ত্রে কি ভাবে প্রতিটি সাধারণ মানুষ স্বাধীনতা ভোগ করবে?


(3) দলহীন গণতন্ত্রের * রূপরেখা * দলহীন গণতন্ত্রে ব্যক্তিগত কোনো "মালিকানা "থাকবে না। ভারতবর্ষের মাটিতে অবস্থিত,কল, কারখানা,জমি, বাড়ি ইত্যাদি,যাবতীয় স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির একমাত্র মালিক হবেন -ভারত-মাতা। সংবিধানে "মন্ত্রী "শব্দ থাকবে না,থাকবে সেবক। যেমন : (1) কেন্দ্রে,প্রধান-সেবক! (2) রাজ্যে,মূখ্য-সেবক! (3) জেলা-সেবক! (4) মহকুমা-সেবক! (5) অঞ্চল-সেবক!ও (6) গ্রাম-সেবক! এই সংঙ্গে (1) কেন্দ্র (2) রাজ্য (3) জেলা (4) মহকুমা (5) ব্লক (6) অঞ্চল। এবং সর্বোপরি (7) গ্রাম। এই 7 টা স্তরেই গঠিত হবে, 7 টি সেবক-সরকার। , পুলিশের নাম বদল করে হবে,গৃহ-সেবক জেলা-গৃহ-সেবক! রাজ্য-গৃহ-সেবক! ও কেন্দ্রীয়-গৃহ-সেবক। এই সঙ্গে, প্রতিটা জেলা, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তরে, প্রতিটা মানুষের ঘর নির্মাণের জন্য থাকবে গৃহনির্মান-সেবক! কৃষির জন্য --কৃষি-সেবক খাদ্য সুনিশ্চিত করার জন্য,খাদ্য-সেবক এই ভাবে,শিক্ষা-সেবক, স্বাস্থ্য-সেবক! শ্রমিক-সেবক! বন-জঙ্গলের জন্য বন-সেবক। সেচের জন্য সেচ-সেবক। প্রতিটি নদী দূষণমূক্ত করার জন্য নদী-সেবক নদীর সঙ্গে নদীর সংযোজন,এবং সারা দেশে নতুন,নতুন খাল কাটার জন্য- উপনদী-সেবক বিনোদন-সেবক! ক্রীড়া-সেবক! মিলিটারি, শব্দের নাম বদল করে হবে মাতৃভূমি-রক্ষক। এনাদের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যে থাকবে: কেন্দ্র-মাতৃভূমি-সেবক! এবং রাজ্য-মাতৃভূমি-সেবক!


(4) প্রথমেই বলে রাখি সারা বিশ্বে কোথাও "গণতন্ত্র" নেই। যা আছে,তা গণতন্ত্রের নামে -প্রহসন। সব দলতন্ত্র। ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গণতান্ত্রিক নির্বাচন পরিচালনা করবেন রাজ্যের ক্ষেত্রে, রাজ্যের (২০) জন প্রধান বিচারপতি। গ্রাম-স্তর থেকে, সমস্ত নির্বাচনই হবে, সম্পূর্ণ প্রকাশ্যে, সকলের চোখের সামনে। এই প্রসঙ্গে বলি : গোপনে ভোট দেওয়ার অর্থ স্বাধীনতার মৃত্যু। গণতন্ত্রে যদি প্রকাশ্যে স্বাধীন মতামত দেওয়ার অধিকার-ই না থাকে, তাহলে, কিসের গণতন্ত্র? কিসের স্বাধীনতা? -------- প্রসঙ্গত বলে রাখি- এই নির্বাচনের জন্য, নির্বাচন কমিশন তৈরী করে,কোটি কোটি টাকা অপচয় করার বিন্দু মাত্র প্রয়োজন নেই।


(5) কেন নির্বাচনে, কোটি কোটি টাকার "প্রয়োজন "নেই? প্রথমেই বলি,এই শতাব্দী বিজ্ঞানের, এই শতাব্দী প্রযুক্তির। এই যুগে, ভোট,অর্থাৎ প্রতিনিধি নির্বাচন হবে,মোবাইলের মাধ্যমে। প্রতিটি মোবাইল "আধার" কার্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এই,আধার নাম্বার-ই হবে ভোটার কার্ড। এক নাম্বারে, এক বার ভোট দেবার পর,সেই আধার নাম্বার লক্ হয়ে যাবে। ফলে,এক ব্যক্তি কখনোই দু,বার ভোট দিতে পারবে না। এই ভোট দানে ভোট দেওয়া "বাধ্যতামূলক"। যদি কেউ ভোট না দেয় সে দেশোদ্রোহী, হিসাবে, কঠোর শাস্তি পাবে। আর এই পদ্ধতিতে ভোট হলে,সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে,কে?ভোট দেয় নি। এবার নিশ্চয়ই ভাবছেন! সবাই, কোথায়! কি ভাবে মোবাইল পাবে? এর উত্তর (বর্তমান পদ্ধতিতে) সরকার গঠনের পর, স্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারের সরকারী-কার্যক্রম অংশে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন "ভোটে "কেনো কোটি,কোটি টাকার প্রয়োজন নেই। হ্যাঁ। নির্বাচন কমিশন বলে একটা প্রতিষ্ঠান অবশ্যই থাকবে। আর তার প্রতিনিধি হবেন,দেশের সর্বোচ্চ আদালতের "প্রধান (২০ জন) বিচারপতি, সঙ্গে থাকবে, প্রধান গৃহ-সেবক এবং প্রধান দেশ-রক্ষক। মোট ২২জন। এনাদের কাজ হবে ২০ বছর বয়স হওয়া মাত্রই ভোটার তালিকাভুক্তি সুনিশ্চিত করা। এই সঙ্গে দেশের প্রতিটি ভোটের খবর রাখা। কোথাও কোনো রূপ ত্রুটি হলেই তার সমাধান করা। যদিও এই পদ্ধতিতে কোনো রূপ ভুল-ত্রুটি হবার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। এই প্রসঙ্গে আর একটা কথা, গ্রাম-স্তর, থেকে প্রতিটা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন একজন স্থানীয় বিচারক, একজন স্থানীয় প্রধান গৃহসেবক, এক জন স্থানীয় সক্ষম বয়োজ্যেষ্ঠ পুরুষ এবং একজন মহিল। এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনে প্রতিনিধি হিসেবে অংশ গ্রহণ করবেন; অবশ্যই শিক্ষিত, বিজ্ঞান-মনষ্ক, দেশ-প্রেমিক, কর্মক্ষম, মানব-দরদী। যে কোনো বিষয়ে বিশেষ গুণসম্পন্ন যেমন :- লেখাপড়া,খেলা আভিনয়*, কৃষি-কাজ, ডাক্তার,ইন্জিনিয়ার ইত্যাদি যে কোনো" মানব-হিতকারী" কর্মে নিযুক্ত "মানুষ " বিঃ দ্রঃ: -লিঙ্গ বিচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।


(6) আমার জন্ম 1947 ইং সাল। আমার জন্মের,, কয়েক মাস পরে,ইংরেজদের তাড়িয়ে ভারতমাতা "স্বাধীন" হন। অখণ্ড ভারতের, লক্ষ লক্ষ, সাধারণ,অতি সাধারণ শিশু, বৃদ্ধ, যুবা, নারী-পুরুষ,রক্তা-ঞ্জলী দিয়ে ভারতমাতাকে বরণ করেন। (ঐ মৃত্যু-মিছিলে আমিও থাকতে পারতাম।) তার পর যখন, সামান্য বোধবুদ্ধি হলো; দেখলাম স্বাধীন ভারতে "গণতন্ত্রের" নামে,বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা। অর্থাৎ,গণতন্ত্রের নামে, দলতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা। আর এই, দলগঠিত হলো কিছু প্রভাবশালী মানুষের,ব্যক্তিগত স্বার্থে এবং ধার করা মতবাদকে কেন্দ্র করে। এই দল অনিবার্য্য ভাবেই, তার কলেবর বিস্তৃত করার উদ্দেশ্যে বাধ্য হলো; সমাজের প্রভাবশালী অসামাজিক,চোর,গুণ্ডা, খুনী ইত্যাদিদের,শুরুতে (চুপিচুপি) সাহায্য এবং পরে "দলভুক্ত" করতে, যা আজ ও প্রবাহমান। প্রথমদিকে,দলীয়-নেতারা, এই সব অসামাজিক লোকদের সরাসরি অস্বীকার করলেও, নিজেদের,স্বার্থে গোপনে স্নেহ করতেন। পরবর্তী কয়েক দশকের মধ্যেই দেখলাম,এই সব খুনি, গুণ্ডাদের,সরাসরি দলীয় কর্মীর স্বীকৃতি, পেতে। এরা দলে এলো। দলের কলেবর বিস্তৃত হলো। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি হলো,সাধারণ মানুষের, উপর অত্যাচার, তোলাবাজি, ভয় দেখানো। শুরু হলো,বোম ইত্যাদি অস্ত্রের উন্মত্ততা। কালক্রমে প্রতিটা দল এবং শাসকগোষ্ঠী অস্তিত্ব রক্ষা ও বাঁচার তাগিদে, এদের একে, একে দলভুক্ত করে, এদেরই দলের,সম্পদ হিসেবে নেতা বানিয়ে ক্ষমতার আসনে বসালো। এই নেতারা, দলের মধ্যে নিজের,ব্যক্তিগত দল তৈরি করে, ক্রমাগত শক্তিশালী, হয়ে ইচ্ছা মতো দল-ত্যাগ,করার স্পর্ধা দেখাতেও,সক্ষম। এরা, সাধারণ মানুষের মনে,আতঙ্ক- সৃষ্টি-কারী জানা সত্বেও, এই গণতন্ত্র-হীন দল-তন্ত্রের বিচার ব্যবস্থা, অথর্ব-পঙ্গুর মতো নীরব দর্শক। কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে অক্ষম। এর অজস্র প্রমাণ সারা দেশে ছড়িয়ে আছে। আজ সারা ভারতে,এমন একটা দল ও নেতা নেই,যে,বা যারা,এই সমস্ত অভিযুক্ত- অপরাধী ও সমাজ-বিরোধীদের তাদের,কৃত-কর্মের জন্য, দল বা নেতৃত্ব থেকে, বহিষ্কার করে। যে দু'এক জন মাঝে,মাঝে বিভিন্ন দল থেকে, বহিষ্কৃত হয়! তার মূখ্য কারণ,দলীয় প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের,সাথে মতবিরোধ এবং দন্দ্ব। গণতন্ত্রের নামে অশিক্ষিত, খুনী, স্বীকৃত ডাকাত, অনায়াসে শাসন ক্ষমতায় এসে,দেশের শিক্ষিত, জ্ঞানী,গুণী মানুষের উপর ছড়ি ঘোরাবার যে স্পর্ধা ওরা পেয়েছে,তার দায়, আমাদের বর্তমানে প্রচলিত "সংবিধান" এবং নির্বাচন পদ্ধতি অস্বীকার করতে পারে না।


(7) আমাদের দেশ ভারতের বর্তমান জন সংখ্যা 137 কোটি। এই 137 কোটি মানুষের মধ্যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক 37 কোটি বাদ দিলে বৈধ ভোটার সংখ্যা (100 কোটি) সুষ্ঠু ভাবে দেশ পরিচালনা করার জন্য (100 কোটি ভোটার সংখ্যাকে) প্রতি রাজ্যে 5 কোটি হিসাবে,মোট 20 টি রাজ্যে বিভক্ত করতে হবে। অর্থাৎ সারা ভারতে থাকবে মোট 20 টা রাজ্য। এই 20 টা রাজ্যের প্রতিটি রাজ্যে থাকবে 10 টা করে জেলা। প্রতিটি জেলায় থাকবে : 5 করে মহকুমা প্রতিটি মহকুমায় থাকবে 10 করে ব্লক। প্রতিটি ব্লকে থাকবে 10 করে অঞ্চল। প্রতিটি অঞ্চলে থাকবে 10 করে গ্রাম। প্রতিটি গ্রাম গঠিত হবে (1000) একহাজার ভোটার নিয়ে। এবার 1 টা জেলার হিসাব কোন স্তরে কতজন (ভোট প্রাপ্ত) জনসেবক থাকবে? প্রথমে : গ্রাম। পূর্বেই বলেছি, একটা গ্রাম গঠিত হবে (1,000) এক হাজার ভোটার নিয়ে। এই এক হাজার মানুষ তাদের গ্রামের সবচেয়ে শিক্ষিত, বিভিন্ন বিষয়ে, বিশেষ গুণসম্পন্ন যেমন কৃষিকাজ,বিজ্ঞান, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক,অভিনেতা, এবং অবশ্যই, মানবহিতকারী জনদরদী, সমাজসেবা ইত্যাদি গুণসম্পন্ন মানুষ দের মধ্যে থেকে (1) এক জন করে (মোট 4 জন) মানুষকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন (1000) এক হাজার মানুষ। (1 টা) ভোটও কম হলে হবে না। যে ভোট না দেবে সে দেশোদ্রহী হিসাবে চিহ্নিত হবে। এই নির্বাচনে একটা সমস্যা হতে পারে। সেটা একই গ্রামে বিভিন্ন গুন সম্পন্ন যেমন : একাধিক শিক্ষক, ডাক্তার, কৃষক, খেলোয়াড় ইত্যাদি আছেন। এ ক্ষেত্রে এদের মধ্যে থেকে,একজন মনোনীত কি ভাবে হবে? এক্ষেত্রে ঐ একই বিষয়ে 2,3 বা 4 জন সকলেই ভোট প্রার্থী হবে। এদের মধ্যে বিষয় অনুযায়ী যে সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে,সেই গ্রামসেবক নির্বাচিত হবে। প্রতি গ্রাম থেকে (4) জন। অর্থাৎ(250) জন ভোটার পিছু (1 জন) গ্রামসেবক নির্বাচিত হবে। এই খানে একটা কথা বলা বিশেষ প্রয়োজন, এই গ্রাম-ই, হবে,ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গণতন্ত্র তথা ভারত মাতার আঁতুড়ঘর। এই আঁতুড়-ঘরেই জন্ম নেবে দেশের সমস্ত সেবক যথা রাজ্যের মূখ্য সেবক (মুখ্যমন্ত্রী) সারা দেশের প্রধান সেবক (প্রধানমন্ত্রী) । এই গ্রামসেবক "নির্বাচনে সারা ভারতে (100) একশত কোটি মানুষের প্রতিটি মানুষকেই ভোট দিতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক।

এই ভোট প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যানার,পোষ্টার,ব্যক্তিগত প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রথমে (পূর্ব-বর্ণীত নির্বাচন কমিশন) দেশের ২০ জন প্রধান বিচারপতি, একজন প্রধান গৃহসেবক,একজন প্রধান দেশ রক্ষক। মোট ২২ জন যৌথভাবে ভোটের তারিখ ঘোষণা করবেন। সারা দেশের সমস্ত পত্রিকা, টিভি ইত্যাদি যত রকম প্রচার মাধ্যম আছে, তার মাধ্যমে। দিন ঘোষণার 7 দিনের মধ্যে উল্লেখিত গুণসম্পন্ন (ভোটে দাঁড়াতে ইচ্ছুক) ব্যক্তিগণ,তাদের যোগতা ও গুণাবলী গ্রামে অবস্থিত,নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি অর্থাৎ এক জন বিচারপতি,একজন প্রধান গৃহসেবক,একজন গ্রামের সবচেয়ে,বয়স্ক কর্মক্ষম পুরুষ,এবং একজন মহিলা। এই 4 চারজনের কাছে জমা দেবে। তারপর এই চার জন সরেজমিনে যাচাই করে,অনুমোদন করার পর ভোটে দাঁড়াবার ছাড়পত্র পাবে। এই ছাড়পত্র পাবার পর 7 দিন সকাল দুপুর ও রাতে,স্থানীয় কেবল টিভির মাধ্যমে, প্রার্থীর নাম ও গুণাবলী দেশের পক্ষ থেকে বিনা পয়সায় প্রচার করা হবে 6 দিন। এবং ঠিক 7 দিনের দিন। গ্রামে বড় পর্দার টিভি লাগিয়ে,মোবাইলের মাধ্যমে গ্রামের 1000 জন ভোটার, প্রকাশ্যে ভোট দেবে। প্রতিটা ভোট দেবার সময়, ভোটদাতার ছবি সহ নাম এবং কাকে ভোট দিলেন সবাই পরিষ্কার ভাবে দেখতে পাবে। এই ভোট গ্রহণ চলবে, সকাল 10 টা থেকে বৈকাল 4 টা। ফলাফল : ভোটদান শেষ হওয়া মাত্র,সবাই জানতে পারবেন,এবং ভোট শেষ হবার 10 মিনিটের মধ্যে গ্রামের নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবেন।



(8) অঞ্চল গঠন এবং প্রধান অঞ্চল-সেবক নির্বাচন পদ্ধতি। এই আলোচনা করার পূর্বে,একটা বাস্তব সত্য তুলে ধরা বিশেষ প্রয়োজন। শুধু মাত্র,আমাদেরই নয়। সারা বিশ্বের,প্রতিটি দেশের হৃদপিণ্ড এবং শিরদাঁড়া, হচ্ছে গ্রাম। একবার ভেবে দেখুন,আমাদের বেঁচে থাকার প্রথম ও এক মাত্র শর্ত --খাদ্য। আর এই খাদ্য উৎপাদন করে শুধু মাত্র গ্রাম তথা গ্রামের কৃষক দাদা। সারা বিশ্বের এবং আমাদের দেশের দলতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠী ও আমাদের সংবিধান দূর্ভ্যগ্যবশতঃ এই গ্রামকেই করেছে সবচেয়ে বেশি অবহেলা। গুরুত্ব দিয়েছে,শহরকে। যাবতীয় সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য,বিনোদন ইত্যাদি, লোভনীয় জীবন যাপনের সুযোগ ও সুবিধা পেয়েছে শহর। যার অনিবার্য্য ফলশ্রুতি, মানুষ হয়ে উঠছে শহর-মুখি। এই বিষয়টা সেই মানুষটার সাথে তুলনীয় যার মুখ, প্লাস্টিক সার্জারি করে অতি সুন্দর করা হয়েছে। আপাদমস্তক মোড়া হয়েছে মূল্যবান রঙচঙে পোশাক দিয়ে। কিন্তু, পোষাকের নীচে? কংঙ্কালসার,হাড় জিরজিরে দেহ,হাত-পা সরু সরু,জরাজীর্ণ বুকের খাঁচা। এই দেহ নিয়ে বেঁচে থাকা যায়। কিন্তু বিশ্বশ্রেষ্ঠ মহাশক্তিধর আত্মনীর্ভরশীল হওয়া যায় না। ভবিষ্যতেও সম্ভব নয়। 137 কোটি সন্তানের জননী আমাদের ভারত-মাতা। এই বিশাল মহা-শক্তির অধিকারিণী, হওয়া সত্ত্বেও,আমাদের মাতা স্বয়ং-সম্পূর্ণা নন্। লজ্জাজনক ভাবে পর-মূখাপেক্ষি। এই বিপুল জন সংখ্যাকে প্রতিটি দলতান্ত্রিক- শাসকগোষ্ঠী শুধু মাত্র ভোটের যন্ত্র হিসেবে দেখেছে। সংবিধান,স্বাধীনতা, গণতন্ত্র,সমানাধিকার ইত্যাদি শব্দের মায়াজাল বুনে সাধারণ মানুষকে প্রকারান্তরে বোকা বানিয়ে শাসন ও শোষণের ব্যবস্থা অব্যাহত রেখেছে। অপ্রিয় হলেও এটাই বাস্তব। এটাই সত্য। আমি পরবর্তী পর্যায়ে বিশ্লেষণ করবো,কি ভাবে এই 137 কোটি মানুষ, ভারতমাতার শ্রেষ্ঠতমো সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। অঞ্চল গঠন এবং অঞ্চল সেবক নির্বাচন পদ্ধতি আলোচনার আগে আর একটা জরুরী বিষয় বলা প্রয়োজন। বর্তমান নিয়মে প্রতি 5 বছর পর পর নির্বাচন হয়। তার একটা মস্তবড়ো কারণ প্রতিটি নির্বাচনে বিপুল অর্থব্যয়। আর এই নির্বাচন পদ্ধতিতে শাসকগোষ্ঠী 5 বছর নিশ্চিন্ত মনে ক্ষমতায় থেকে,ইচ্ছামতো সাধারণ মানুষের উপর ছড়ি ঘোরাবার সুযোগ পায়। সাধারণ মানুষ সবকিছু দেখে,বুঝেও শুধু মাত্র অশহায়ের মতো চেয়ে,চেয়ে দেখে। তারপরেও দেখা যায় দলতন্ত্রের প্রভাবে ভোটের মাধ্যমে পুনরায় নির্বাচনে জিতে, ক্ষমতায় আসে। অনিবার্য্য ভাবেই বিরক্ত হয়ে, সাধারণ মানুষের একাংশ ভোট বিমূখ হয়। যারা ভোট দান করেন,তাদের ভোট সংখ্যা অসংখ্য দলে বিভক্ত হয়ে,এই প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতিতে যেখানে সারাদেশের ভোটার সংখ্যার কমপক্ষে 50.1 শতাংশ ভোট নিয়ে, শাসন ক্ষমতায় আসার কথা, সেখানে 30 থেকে 40 শতাংশ অর্থাৎ সংখ্যালঘু হয়েও সংখ্যাগুরুর উপর কর্তৃত্ব করার অধিকার পায়। ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গণতান্ত্রিক নির্বাচন(5) বছর পর, পর নয়। নির্বাচন হবে (2) দুই বছর পর, পর। আর, এক ব্যক্তি,শুধু মাত্র (2) দুই বার নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন। এই দুই বার দাঁড়ানো,এবং 2 বছর পর,পর প্রতিটি স্তরেই, যথা গ্রাম-সেবক থেকে রাজ্যের মূখ্যসেবক (মুখ্যমন্ত্রী) দেশের প্রধান-সেবক (প্রধান মন্ত্রী) সবার ক্ষেত্রে ই প্রযোজ্য। আর এই নির্বাচনে দাঁড়াবার বয়স সীমা(২৫) পঁচিশ বছর থেকে (৫৫) বছর পর্যন্ত্য এবং কোনো ক্রমেই এই বয়স সীমা ৫৫ বছর অতিক্রম করবে না। অর্থাৎ (৫৫ বৎসর) বয়স হলেই সমস্ত কর্ম থেকে অবসর নেওয়া বাধ্যতামূলক। বিঃ দ্রঃ,শুধু মাত্র গ্রামসেবক "নির্বাচনেই সারাদেশের (100) কোটি ভোটার অংশগ্রহণ করবে। পরবর্তী পর্যায়ের কোনো নির্বাচনেই এই (100) একশত কোটি, মানুষ অংশ গ্রহণ করবে না। অর্থাৎ ভোট দেবে না। ভোট দেবে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যেমন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দেবে, শুধু মাত্র গ্রাম-সেবকরা। বিঃ দ্রঃ, সাম্যবাদী দল সহ সারা বিশ্বের,প্রতিটি দলের,গঠনতন্ত্রের সাথে ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গনতন্ত্রের,গঠনতন্ত্রের এটাই মূল তফাৎ,যা কখনোই,ব্যক্তি বিশেষকে আমৃত্যু,ইচ্ছা মতো ছড়ি ঘোরাতে দেবে না।


(9)গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন পদ্ধতি বিশ্লেষণ করার আগে,আরো একটা কথা বলা বিশেষ প্রয়োজন। আমাদের সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী এক মাত্র রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার দেশ পরিচালনা ও নীতি নির্ধারণ করার জন্যে বিভিন্ন বিষয়ের মন্ত্রী নিয়োগ করার অধিকারী। (শিক্ষা মন্ত্রী,অর্থ মন্ত্রী ইত্যাদি)। এই নিয়োগে মূখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেন রাজ্যে-- মূখ্য-মন্ত্রী। কেন্দ্রে -প্রধান-মন্ত্রী। এই মন্ত্রিত্ব পাবার ক্ষেত্রে,(অধিকাংশ) যোগ্যতা নয়। দেখা হয়, কে কতবেশী মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুগত! এবং কতটা অর্থবান, বাহুবলী!ও প্রভাবশালী"! আর এটা ভারতমাতা স্বাধীন হবার পর দলতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার দিন থেকে, চলে আসছে। ফলস্বরুপ,যে ব্যক্তি,, কোনো দিন" চাষ" করেনি, সে হয় কৃষি-মন্ত্রী। খেলার মাঠের অখ্যাত খেলোয়াড় হয় ক্রীড়া-মন্ত্রী। অর্থ নীতির জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও হয় অর্থ-মন্ত্রী। শিক্ষা গত যোগ্যতা না থাকলেও শিক্ষা-মন্ত্রী ইত্যাদি হতে কোনো বাধা নেই। এই প্রসঙ্গে আর একটা কথা বলা বিশেষ প্রয়োজন--- এই সমস্ত মন্ত্রীরা, সবাই মূলত,আমলা নির্ভর। এই আমলা-গন প্রায় সকলেই প্রচুর লেখাপড়া জানা- বিদ্বান, সু-চতুর, আত্ম-কেন্দ্রিক,দাস-মনোভাবাপন্ন,হয়ে থাকেন। এরাই নেপথ্যে থেকে,দল ও মন্ত্রীর চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয়ের নীতি নির্ধারণ,ভাষণ ইত্যাদি লিখে, মন্ত্রীদের কর্মপথ সুগম করার সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এই প্রচলিত পদ্ধতি পুরোটাই,দলতান্ত্রিক ব্যক্তি নির্ভর অ-গণতান্ত্রিক। নির্দ্বিধায় বলা যায় বাস্তব বোধ এবং অভিজ্ঞতা হীন ব্যক্তির (মন্ত্রী) ক্ষমতার আসনে, ঠাণ্ডা ঘরে বসে, সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার এই যে পদ্ধতি এটা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক অনভিপ্রেত। বিঃ দ্রঃ-ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গণতন্ত্র,এই পদ্ধতির সম্পূর্ণ বিপরীত। কার্যকরী ও গুরুত্ব পূর্ন এবং শক্তিশালী মন্ত্রিসভা গঠন হবে গ্রামে, অঞ্চলে। (প্রচলিত নিয়ম মতো কেন্দ্রের লোকসভা এবং রাজ্যে বিধানসভায় নয়।) আমি ইতিপূর্বে বলেছি,এক হাজার জন,সংখ্যা বিশিষ্ট গ্রাম থেকে(4 চার) জন বিভিন্ন গুন সম্পন্ন গ্রামসেবক নির্বাচিত হবে। একটা অঞ্চল (10 টা) গ্রাম নিয়ে গঠিত হবার ফলে (10 টা) গ্রামের (4x10= 40 জন) নির্বাচিত সদস্য নিয়ে গঠিত হবে একটা অঞ্চল। এই (40 জন) সদস্যদের মধ্য থেকে বিশেষ, বিভিন্ন গুন সম্পন্ন(20) জনকে নিয়ে গঠিত হবে অঞ্চল সেবক (মন্ত্রী) সমিতি। এই (20) জন কে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে, উক্ত (40) জন গ্রাম-সেবক। এই(20 জন) তাদের শিক্ষা, জ্ঞান, কর্মদক্ষতা এবং যোগ্যতা অনুসারে,নিম্নোক্ত (20 টা) বিষয়ের সক্রিয় প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করবেন। (1) খাদ্য। (2) পানীয় (বিশুদ্ধ) জল। (3) বস্ত্র। (4) বাসস্থান। (গৃহনির্মান) । (5) স্বাস্থ্য। (6) শিক্ষা। (7) বিদ্যুৎ ও জ্বালানী (8) খেলা। (9) বিনোদন। (10) রাস্তা। (11) জলাশয় (পুকুর, বিল। ) (12) নদী ও খাল। (13) বনভূমি (বনসৃজন) । (14) শিল্প (কল- কারখানা) । (15) পশু-পালন (যাবতীয় গৃহপালিত)। (16) ব্যবসা। (17) পরিবহন (স্থল- জল- আকাশ)। (18) অর্থ। (19) যান-বাহন। (20) গবেষণা। এই 20 টা একান্ত প্রয়োজনীয় বিষয়ে(20 জন প্রতিনিধি) গ্রামের উন্নয়ন ও প্রগতির সাথে সরাসরি যুক্ত হয়ে,সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।


(10) প্রধান অঞ্চল সেবক নির্বাচন। প্রধান অঞ্চল সেবক নির্বাচিত হবেন উক্ত (20 জন) (মন্ত্রী) বিশেষ, গুণসম্পন্ন ব্যক্তিগণের মধ্যে থেকে যিনি অধিক শিক্ষিত এবং একাধিক গুণসম্পন্ন ধীর স্থির বিচক্ষণ ব্যক্তি। তিনি উক্ত (20 জন) গ্রাম-সেবক, দ্বারা সর্ব-সম্মত। অথবা একাধিক সম গুণসম্পন্ন দাবীদার থাকলে,ভোটের মাধ্যমে প্রধান অঞ্চল সেবক নির্বাচিত হবেন। প্রতিটি স্তরেই নির্বাচন হবে প্রকাশ্যে। ভোট পরিচালনা করবেন (1 বা 2 জন) বিচার-পতি স্থানীয় প্রধান গৃহসেবক (পুলিশ অফিসার) গ্রামের সবচেয়ে বয়ষ্ক কর্মক্ষম একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা। ব্লক-সেবক নির্বাচন। আমি ইতিপূর্বে এক,একটা অঞ্চল থেকে (20 জন) অঞ্চল -সেবক পেয়েছি। মোট (10 টা) অঞ্চল নিয়ে গঠিত হবে ব্লক-সেবক সমিতি অর্থাৎ---- (20 মন্ত্রী x10=200) জনকে নিয়ে। এই (200 জনের) মধ্যে অঞ্চল সেবক নির্বাচনের পদ্ধতি অনুযায়ী (20 জন) উক্ত বিভিন্ন বিষয়ের শ্রেষ্ঠ গুণসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হবে ব্লকসেবক সমিতি। এবং এই (20 জনের) মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি হবেন,প্রধান ব্লক-সেবক। এই একই পদ্ধতি অবলম্বন করে মহকুমা সেবক প্রতিনিধি নির্বাচন হবে (10 টা) ব্লকের (20 জন x 10) = (200 জন) সেবকদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ(20 জনকে) নিয়ে এবং একই ভাবে, প্রধান মহকুমা সেবক নির্বাচিত হবেন। জেলা সেবক এবং প্রধান জেলা সেবক নির্বাচন হবে(5 টা) মহকুমা সেবকদের অর্থাৎ (5 x 20 = 100 জনের) মধ্যে শ্রেষ্ঠ (20 জন) কে নিয়ে এবং একই পদ্ধতিতে। একই ভাবে প্রধান জেলা সেবক নির্বাচিত হবেন। এবার রাজ্য সেবক নির্বাচন : রাজ্যসেবক নির্বাচন হবে(20 টা) জেলার প্রতিটি জেলার (20 জন x 20 = 400 জনকে) নিয়ে। এই (400 জনের) মধ্যে থেকে (20 জন) এবং সাথে আরও (20 জন) সহকারী নিয়ে রাজ্যসেবক সমিতি গঠন হবে। এবং এই (400 জনের) মধ্যে সর্বোত্তম,শিক্ষিত, জ্ঞানী গুণী, বিজ্ঞান-মনষ্ক মানব-দরদী ব্যক্তি, ঐ (400 জনের) সর্বসম্মতিক্রমে অথবা একাধিক প্রতিযোগী থাকলে (3 জন) বিচারপতি (1 জন) রাজ্যস্তরের গৃহসেবক(1 জন) (পুলিশ প্রধান) 1 জন রাজ্যস্তরের গৃহ রক্ষক (মিলিটারি) এই (5 জন) মিলে নির্বাচন পরিচালনা করবেন। সব ক্ষেত্রেই ভোট হবে প্রকাশ্যে, সরাসরি প্রতিটি টিভি চ্যানেল সম্প্রচার করবে। আশাকরি,সবাই বুঝতে পারছেন,এই জনপ্রতিনিধি নির্বচনে শুধু মাত্র শিক্ষা এবং গুণ-ই জনপ্রতিনিধি হবার একমাত্র মাপকাঠি।


11) কেন্দ্রীয় সেবক এবং কেন্দ্রীয় প্রধান সেবক নির্বাচন। ঠিক যে পদ্ধতিতে রাজ্যে মুখ্য সেবক (1 জন) সহ বিভিন্ন বিষয়ের (20 জন) সেবক এবং (20 জন) সহযোগী সেবক মোট (1+20+20=) 41 জন নির্বাচিত হয়েছেন ঠিক তেমনি,ভারত-মাতার (20টা) রাজ্যের,প্রতিটি রাজ্যের 1 জন রাজ্য মূখ্য-সেবক আর (40 জন) বিশেষজ্ঞ সেবক সর্বমোট 1 +40 =41 জন। অর্থাৎ কেন্দ্রে (41 x 20) =820 জন। এই (820 জনের) মধ্যে "সর্বোত্তম" আদর্শ-বান,শিক্ষিত, জ্ঞানী, গুণী এবং বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী,যোগ্যতম ব্যক্তি,নির্বাচিত হবেন, দেশের প্রধান সেবক (প্রধানমন্ত্রী) সর্বসম্মতিক্রমে। আর একাধিক প্রার্থীর ক্ষেত্রে উক্ত (820 জ) ভোট দিয়ে ভারত-মাতার প্রধান সেবক (প্রধান-মন্ত্রী) নির্বাচিত করবেন। এবং ঐ 820 জনের মধ্যে থেকে, বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ,বিশেষ গুণসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হবে কেন্দ্রীয় সেবক (মন্ত্রী) পরিষদ। এই গুণসম্পন্ন, যোগতম ব্যক্তি,বাছাই এর ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন,দেশের সর্বোচ্চ আদালতের (২০ জন) বিচারপতি। (৩ জন) প্রধান দেশরক্ষক (জল +স্থল+ বিমা) । সর্বোচ্চ (2 জন) কেন্দ্রীয় গৃহ-রক্ষক (পুলিশ ও গুপ্তচর বিভাগ) । মোট --(20+3+2) = 25 জন। এনারাই শিক্ষা,জ্ঞান কর্মদক্ষতা ও গুণের ভিত্তিতে, উল্লেখিত খাদ্য,পানীয়, শিক্ষা,স্বাস্থ্য ইত্যাদি (20 টা) এবং প্রয়োজন হলে "আরো কয়েকটা জনস্বার্থ, বিষয়ের কেন্দ্রীয় সেবক(মন্ত্রী) নির্বাচিত হবেন, হয় সর্বসম্মতিক্রমে না হয় ঐ (820 জনের) দেওয়া,প্রকাশ্য ভোটের মাধ্যমে। আশাকরি এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন,রাজ্যে, এবং কেন্দ্রে যে সকল মানুষ নিয়ে জন-সেবক (অধুনা প্রচলিত মন্ত্রী) নির্বাচিত হবেন তারা এক, এক জন দেশের,বাছাই করা "রত্ন "। এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলা বিশেষ প্রয়োজন,প্রচলিত দল তন্ত্রে,দল আগে, তারপর মানুষ। ঠিক, একই নিয়ম দেখতে পাওয়া যায়,মার্ক্সবাদি - সর্বহারাদের একনায়কতন্ত্রে। এই দল তন্ত্র কখনোই মানুষ কে তার কাঙ্খিত স্বাধীনতা দেয় নি। দেয় না। যার অনিবার্য্য ফলশ্রুতি,রাশিয়া সহ পৃথিবীর বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক দেশের, সাম্যবাদী সরকারের পতন। এই দলতান্ত্রিক দলের নেতৃবৃন্দ, ক্ষমতা পাবার আগে সাধারণ মানুষের দুঃখ,কষ্টের কথা বলে, তাদের সাম্যবাদের স্বপ্ন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সমর্থনে, ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতায় আসার পরেই,সেই জনগনের মাথার উপরেই নামিয়ে আনে শোষণ,অত্যাচার। এ কথা অনস্বীকার্য যে, আমাদের দেশের সাম্যবাদী প্রথম সারির নেতারা,ব্যক্তিগত চরিত্রে নির্লোভী,সৎ হলেও, দ্বিতীয়,তৃতীয়,এবং গ্রামস্থিত চতুর্থ শ্রেণীর নেতারা সাধারণ মানুষের উপর নামিয়ে আনে শোষণ, তোলাবাজি স্বজনপোষণ। ফলে,তৃণমূল স্তরের সাধারণ মানুষ এবং সাধারণ সাম্যবাদী সমর্থক বীতশ্রদ্ধ হয়ে,সমাজতান্ত্রিক সরকারের অবসান ঘটাতে দ্বিধা করে না। সবচেয়ে আশ্চর্য জনক ঘটনা,প্রথম শ্রেনীর সাম্যবাদী নেতারা, মানুষের চেয়ে দলকে বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে সেই দলেরই আসল ভিত্ সাধারণ মানুষকে পাত্তা দেয় নি। পাত্তা দিয়েছে দুর্নীতি গ্রস্ত তৃতীয়,চতুর্থ শ্রেণীর নেতাদের! এর ভুরিভুরি প্রমাণ সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। আর এটাই, সারা বিশ্বের সমস্ত "দলতান্ত্রিক" দলের অন্তর্নিহিত বাস্তব সত্য।


12) তথাকথিত "গণতন্ত্রের" প্রতিষ্ঠাতা! আমাদের সংবিধানে, বড়ো,বড়ো অক্ষরে লিখেছেন: (1) সাধারণ মানুষের দ্বারা (2) সাধারণ মানুষের জন্য (3) সাধারণ মানুষের গণতন্ত্র হ্যাঁ! (1 নং) কথাটা সঠিক। সাধারণ মানুষের দ্বারা অর্থাৎ,আমরা সাধারণ মানুষেরা,অসংখ্য দলের মধ্যে,একটা দলকে ভোট দিয়ে দলতান্ত্রিক সরকার গঠন করি। আর দলতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় এসেই, সংবিধানে উল্লেখিত (2) সাধারণ মানুষের জন্য (3) সাধারণ মানুষের এই দুটো কথা, বেমালুম, ভুলে যায়। ক্ষমতায় টিঁকে থাকা এবং দলকে শক্তিশালী করার জন্য অতি সাধারণ ভোট দাতাদের চেয়ে, অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়,অসৎ, অসামাজিক,আর্থিক এবং পেশীশক্তিতে বলীয়ানদের। আর অনিবার্য্য ভাবেই সাধারণ মানুষ অন্ততঃ(5) বছরের জন্য হয়ে যায় গুরুত্বহীন দাস-দাসী। এই বিষয়টা আরো স্পষ্ট ভাবে বোঝানোর জন্য,একটা বাস্তব উদাহরণ :-- সঠিক গণতন্ত্র সেই --ছেলে,যে,আমৃত্যু মা-বাবার সাথে থাকে। মা ও বাবাকে, সবার চেয়ে,সবকিছুর চেয়ে,বেশি "গুরুত্ব" দেয়। তাদের,সেবা-যত্ন করে। কখনো,কোনো কারণেই মা-বাবার চোখে,বিন্দু মাত্র জল ঝরতে দেয় না। আর পক্ষান্তরে দলতন্ত্র?? দলতন্ত্র সেই ছেলেরা,যারা বাবা-মায়ের ঘাম ও রক্ত-জলে বড় হয়ে, তাদের দয়ায় লেখাপড়া শিখে,প্রতিষ্ঠিত হবার সঙ্গে সঙ্গে,সেই মা ও বাবাকে পাঠায় বৃদ্ধাশ্রমে। মা-বাবার চোখের জল তাদের কাছে, ফালতু,সেন্টিমেন্ট। তবে হ্যাঁ। একেবারে ভুলে যায় না। দূর থেকে,মাঝে, মাঝে খবর নেয়, কখনো-কখনো দয়া দেখিয়ে,কিছু টাকা পাঠিয়ে,কর্তব্য পরায়ণতার নিদর্শনও রাখে। ঠিক,এই ভাবেই দলতন্ত্রের নেতারা" পাঁচ বছর,পরপর,সেই বৃদ্ধাশ্রমে (বাড়ি, বাড়ি) গিয়ে,হাত জোড় করে,ভালো-ভালো কথার ফুলঝুরি আর প্রতিশ্রুতির-বন্যা এমনকি,পায়ে হাত দিতেও দ্বিধা করে না। যেনতেন,প্রকারে চাই আশীর্বাদ, মানে,ভোট। সাথে কিছু ফল-মূলও থাকে। বেচারি বাবা-মা! হ্যাঁ। বেচারি!! দলতন্ত্র নামক সন্তানের মা ও বাবা অর্থাৎ জনগণ সত্যই বেচারা! আশাকরি "গণতন্ত্র "এবং "দলতন্ত্রের "তফাৎটা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। ঠিক একই ভাবে ক্ষমতার শিখরে থাকা দলের নেতা-নেত্রীরা সাধারণ মানুষের দুঃখ,দুর্দশায় "কুম্ভীরাশ্রু" বিসর্জন করে, মানবদরদী হবার মহড়া দেন। এই প্রসঙ্গে আর একটা কথা বলা প্রয়োজন, এই দলতান্ত্রিক প্রতিটি দলই নিজেদের দলের বিদ্রোহী এক বা দুজন মানুষকে, দল থেকে তাড়াবার সময় তাদের ভাষণে বলে থাকেন- ব্যক্তির অর্থাৎ, মানুষের চেয়ে, দল বড়। হ্যাঁ,দলতন্ত্রে এটাই,দস্তুর। দু'চার জন,ব্যক্তির ক্ষেত্রে, একথা দলের নেতা-নেত্রীরা বলতেই পারেন। কিন্তু, এই দলকে যারা বড় করে,সেই অতি-সাধারণ,অর্ধাহারে, অনাহারে থাকা" হাড় জিরজিরে,খেটে খাওয়া অসংখ্য মানুষ!তাদেরও কি ঐ কথা বলা যায়? বলা যায়? তোমাদের চেয়ে দল বড়ো! আর একটা কথা, গণতন্ত্রে রাজ-নীতি মানে,রাজার নীতি শব্দের কোনো ঠাঁই নেই। রাজা,মন্ত্রী,শব্দের সাথে জড়িয়ে আছে, "সামন্ত-তান্ত্রিক মানসিকতা। এরই, বাস্তব প্রতিফলন,আমরা দেখতে পাই,প্রতিষ্ঠিত দলতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায়। ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গণতন্ত্র হবে এর সম্পূর্ণ বিপরীত। বিঃ দ্রঃ : আমি ইতিপূর্বে গ্রামসেবক সহ যাবতীয় সেবক-সংখ্যার যে হিসাব দিয়েছি হয়তো, পাটীগণিতের হিসাবে সংখ্যা গত ভুল থাকতে পারে। । কিন্তু, নির্বাচন -পদ্ধতিতে কোনো ভুল নেই


13) দলতন্ত্রে,দলের দলপতি অর্থাৎ সর্বোচ্চ নেতার কথাই,শেষ কথা। আমার প্রস্তাবিত গণতন্ত্রে কোনো একজন বা দু’জন (নির্বাচিত) ব্যক্তির কথা,কখনোই শেষ কথা হবে না। এই বার এদের কর্মপদ্ধতি এবং ক্ষমতা বিষয়ে আলোচনা করছি। গণতন্ত্রে ব্যাক্তি তথা"জনগনের " মূল্য সবার আগে। জনগণের, চাহিদা ও যথার্থ দাবী এবং অভিযোগ,প্রতিটি সেবক শুনতে,এবং প্রতিকার করতে বাধ্য। কোনো স্তরের-ই কোনো সেবক, কাউকেই আদেশ দিতে পারবে না। গণতন্ত্রে, সাধারণ, মানুষকে "আদেশ "দেবার অধিকার থাকবে-- বিচারকদের। আদেশ দিতে পারবে,দেশ-রক্ষক (মিলিটারি) ও গৃহসেবক (পুলিশ) তাদের বিভাগীয় ব্যক্তিদের,। শিক্ষাক্ষেত্রে,শিক্ষক। সংসারের ক্ষেত্রে বাবা-মা সহ বয়ষ্ক গুরুজন। এনারা ছাড়া,আর কেউই দেশের কোনো সাধারণ মানুষকে কোনো বিষয়ে আদেশ দিতে বা জোর করে কোনো কাজ বা কথা মেনে নিতে,বাধ্য করতে পারবে না। বিভিন্ন পর্য্যায়ের সেবকেরা (দেশের ও মানুষের,মঙ্গলের জন্য) প্রথমে,নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্রধান সেবকেরা সেটা লিখিত আকারে প্রকাশ করবেন। বিঃ দ্রঃ-প্রতিস্তরের প্রধানদের (প্রধান অঞ্চল সেবক থেকে, রাজ্যের মূখ্যসেবক (মুখ্যমন্ত্রী) কেন্দ্রের প্রধান সেবক (প্রধানমন্ত্রী) মূল কাজ পরষ্পরের, সাথে "সমন্বয়" সাধন করা। এবং নিজের ব্যক্তিগত বক্তব্য সহ সেবকদের সর্বসম্মতিক্রমে নেওয়া সিদ্ধান্ত,"ঘোষক" হিসাবে জনসাধারণকে জানানো। যে কোনো ভাবেই হোক, সাধারণ মানুষের উপর,ব্যক্তিগত, সিদ্ধান্ত অর্থাৎ ছড়ি ঘোরাবার চেষ্টা শাস্তি যোগ্য অপরাধ বিবেচিত হবে। এই খানেই "দলতন্ত্রের" সাথে "গণতন্ত্রের" মূল তফাৎ। দলতন্ত্র সমস্ত ক্ষমতা, দলপতি তথা নেতার হাতে দিয়ে হিটলার,গর্বাচভ ইত্যাদির জন্ম দেয়। আর এরই ফলশ্রুতি,(মুষ্টিমেয় কয়েকজনের সমর্থনে) ব্যক্তিগত ক্ষমতা প্রয়োগ করেই গর্বাচভ, রাশিয়াকে করেছে ছিন্নভিন্ন। চীন তার সাম্যবাদী চরিত্র হারিয়ে ধনতান্ত্রিক দেশের অনুকরণে দলেরই কিছু মানুষকে, যেমন,প্রচণ্ড ধনী (জ্যাক মা) হতে সাহায্য এবং অপর দিকে-- দুর্দশাগ্রস্ত, সাধারণ মানুষকে চুপ করিয়ে সাম্যবাদ কথাটাকেই অর্থহীন শব্দে পরিণত করেছে। আশাকরি গণতন্ত্রে কার? কি?এবং কতটা ক্ষমতা? সেটা বোঝাতে পেরেছি।

14) আমাদের,সংবিধান সাধারণ মানুষকে,গণতন্ত্র দেয় নি। দেয় নি-- "স্বাধীনতা"। তার প্রথম প্রমাণ, --আমরা প্রকাশ্যে আমাদের মত জানাতে পারি না। আমাদের মত, তথা আমাদের ভোট গোপনে দিতে হয়। অর্থাৎ এই ভোট দানের মধ্য দিয়ে, আমাদের পরাধীনতার শুরু। আমাদের নেতা,নেত্রীরা সকলেই বলে থাকেন ভোট দান একটা পবিত্র কর্তব্য! এ কেমন,পবিত্র কর্তব্য! যা,গোপনে করতে হয়? সবাই জানেন-- মানুষ শুধুমাত্র অবৈধ এবং বেআইনী কাজ গোপনে করে। তাহলে কি বলতে,পারি না! এই গোপন ভোটদান পদ্ধতি আমাদের বেআইনী ও অবৈধ কাজ করতে বাধ্য করছে? এই (ভোট) মতদানের মধ্যেও,দলতান্ত্রিক দল ও দলের নেতারা,সাধারণ মানুষের ইচ্ছার সঠিক প্রতিফলন ঘটতে দেয় না। কখনো গায়ের জোরে,কখনো লোভ দেখিয়ে,আবার ইদানিং শোনা যায়-ই,ভি,এম মেশিনে গোলযোগ ঘটিয়ে আমাদের ইচ্ছার,এবং আমাদের স্বাধীনতার,অন্তর্জলি যাত্রা সুনিশ্চিত করতে সচেষ্ট। আর ও একটা কথা বলা প্রয়োজন,আমাদের আইনে,420 ধারা আছে! যে ধারায়, বলা আছে বিশ্বাস-ভঙ্গ প্রতারণা ধাপ্পাবাজি লোকঠকানো শাস্তি যোগ্য অপরাধ। অথচ আপনি!সেই বিশ্বাস করেই (ক বাবুকে) - (খ বাবুর) বিরুদ্ধে, ভোট দিয়ে ভোটে জেতালেন! আর(ক বাবু???) ভোটে জিতে হাসতে, হাসতে (খ বাবুর) সাথে হাত মিলিয়ে তার "কোলে" বসে পড়লেন! এটা কে, আপনি কি বলবেন? আপনি তো বিশ্বাস করে, ভোট দিয়ে (ক বাবুকে) জিতিয়েছেন! তাহলে এটা, কি আপনার সাথে,চিটিংবাজী!ধাপ্পাবাজি নয়? শুনেছেন কখনো? এই সব চিটারদের এক জনকেও,420 নং ধারায় অভিযুক্ত করে জেলে পাঠাতে??? না! কেউ শোনেন নি। আর কখনও শুনবেনও না। এই সঙ্গে আর একটা কথা মনে করিয়ে দেবো কিছু দিন আগে একটা আইন পাশ হয়েছে, যাতে বলা আছে, এই সব বিশ্বাস ঘাতকেরা,একজন, দু'জন দল-ত্যাগ করলে অপরাধ। কিন্তু, দলবেঁধে দল-ত্যাগ করা বৈধ। অর্থাৎ,দলবেঁধে চিটিং করা, অপরাধ নয়। আর,এ ক্ষেত্রে বলতে বাধ্য হচ্ছি কানুন অন্ধ!!! দলতন্ত্রে, এই চিটিংবাজরাই দলের সম্পদ। ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গণতন্ত্রে এই লোক-ঠকানো দলের কোনো অস্তিত্ব-ই থাকবে না। থাকবে, মানুষ,থাকবে জনগণ। ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গণতন্ত্রে,নির্বাচিত সেবকেরা ভারতমাতার সন্তানদের জন্য কি, কি করবেন? প্রথমেই বলি : আমাদের ভারত-মাতা সারা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে " বিত্তশালী" ধনবান ও শক্তিমান। হ্যাঁ আমি একদম সঠিক বলছি। আমাদের ভারত-মাতা সারা পৃথিবীর সমস্ত দেশকে দয়া করার মতো সম্পদের মালিক। অনেকই হয়তো কথাটা শুনে হাসছেন। আমি বলবো না! হাসবেন না। আমি একে একে ভারত-মাতার' শক্তি এবং সম্পদের উল্লেখ করে তার,প্রমাণ দেবো। এই মূহুর্তে,ভারতমাতার সবচেয়ে বড় সম্পদ মাতার 137 কোটি সন্তান। এই 137 কোটি মানুষ দলতান্ত্রিক নেতা-নেত্রীর কাছে,শুধু ভোট দেবার যন্ত্র। ভোটে জেতার পর,এই জনসংখ্যা তাদের কাছে জঞ্জাল এবং নিজেদের অক্ষমতা ঢাকার একটা বাহানা। হ্যাঁ। 137 কোটি জনসংখ্যা, যে কোনো দেশের পক্ষেই বেশি,এবং এটা নিয়ন্ত্রণ করাটাও জরুরী। আমাদেরও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কিন্তু, এই মুহূর্তে,দলতন্ত্রের কাছে যারা জঞ্জাল। ভারতবাদী গণতন্ত্রের কাছে ভারত-গঠনে তারাই, অমূল্য সম্পদ।


15) স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র এই দুটি বিষয়ে,দুই শ্রেণীর মতবাদ আছে। একশ্রেণীর মানুষের কাছে,স্বাধীনতা মানে : যা খুশি, তাই করা। (যেমন, ইচ্ছা মতো খুন করা,চুরি,ডাকাতি ইত্যাদি) যেটা যাবতীয় বন্য-প্রাণীদের মধ্যে বিদ্যমান। এটাকে বলে, পাশবিক-গণতান্ত্রিক-স্বাধীনতা। আর অপরটি হল মানুষের দ্বারা, মানুষের জন্য,মানুষের মানবিক গণতন্ত্র। যেটা শিক্ষিত মানুষের,চেতনা দ্বারা সৃষ্টি। এই গণতন্ত্র ইচ্ছা মতো যা খুশি, করতে শেখায় না। শেখায় মানবিকতা। শেখায় শিক্ষা,রুচি,শালীনতা সহ,পরস্পর পরষ্পরের প্রতি ভাতৃত্ববোধ। আমি ইতিপূর্বে বলেছি, সারা বিশ্বের মধ্যে সব থেকে "ধনবান "এবং "বলবান" আমাদের মাতা ভারত-মাতা। সারা বিশ্বের কোনো তথাকথিত, বাদা-শ্রিত দল বা দলতন্ত্র নয়। একমাত্র ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গণতন্ত্র-ই পারে ভারত-মাতার এই মহাশক্তির বিকাশ ঘটাতে। এই বিকাশের মূল কারিগর ভারত-মাতার সন্তান, সাধারণ জনগন তথা জনশক্তি। এই শক্তির মূল চাহিদা,খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান। সকলেই জানেন,উক্ত তিনটি শর্ত পুরন করার জন্য,আমাদের প্রতিটি মানুষেরই- চাই অর্থ অর্থাৎ টাকা। আর এই টাকার সম্পূর্ণ যোগান দেবে ভারতমাতা। শুধু,আমাদের নয় বিশ্বের প্রতিটি দলতন্ত্রের কাছে এই (137 কোটি) বিপুল জনসংখ্যা (শুধু মাত্র ভোটের সময় ছাড়া) অবাঞ্ছিত। আজ সারা বিশ্বের,প্রতিটি দলতান্ত্রিক সরকার যেখানে একে, একে জনতার কাজ (চাকরী) কেড়ে নিয়ে অনাহারে, মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সেখানে,ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন-গণতন্ত্রে আমাদের ভারত-মাতা দেশের এই (আনুমানিক) 100 কোটি মানুষের প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে কাজ দেবে। বিঃ দ্রঃ- দেশে বিন্দুমাত্র কাজের অভাব নেই। ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গণতন্ত্রে ২০ বছর বয়স হওয়া মাত্রই ছেলে এবং মেয়ে ভোট দেবার অধিকারী হবে। আর ভোটাধিকার, পাওয়ার দিন থেকে, তার ব্যঙ্কের খাতায় (আমৃত্যু) প্রতিমাসে, (10,000) দশ হাজার টাকা "ভাতা" হিসাবে জমা হবে। আর এই ভাতা পাওয়াটা, প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের আইন-সিদ্ধ- গণতান্ত্রিক অধিকার হিসাবে ঘোষিত, হবে। তবে নগদ হিসাবে হাতে কোনো টাকা নয়। এই টাকা নাম অনুসারে, ভারত-মাতা প্রদত্ত ব্যাঙ্কের খাতায় জমা হবে। এবং প্রত্যেক ব্যক্তি টাকা,তোলা ও জমা শুধু মাত্র ATM এর মাধ্যমে করবেন। বাজারে কোনো কাগজের নোট বা ধাতব কয়েন থাকবে না। সারাবিশ্বে যতগুলি অপরাধ ঘটে বা আছে,তার 99.99% ভাগ অপরাধের সাথে,জড়িয়ে আছে অর্থ অর্থাৎ টাকা। বর্তমানে, আমরা সকলেই, টাকা রোজগার করি, শুধু মাত্র নিজে, এবং নিজের পরিবার-পরিজনদের (এক পুরুষের) জন্যে নয়। আগামী(14 পুরুষদের) জন্য। আর এই অপর্যাপ্ত সম্পদের লোভে,আমরা প্রতিনিয়ত টাকার পিছনে ছুটতে গিয়ে হারাচ্ছি,- বিবেক। হারাচ্ছি ---মনুষ্যত্ব। এই টাকা যদি কারো কাছে না থাকে এবং টাকা ছাড়াই যদি প্রতিটি মানুষ, তাদের যাবতীয় সুখ সাচ্ছন্দ ভোগ-বিলাস সহ, মানসিক চাহিদা পুরন করতে পারে,তাহলে নিশ্চয়ই তাদের নগদ টাকা বা অর্থের প্রয়োজন নেই। এবার স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠবে এই বিপুল অর্থ দেওয়া কি সম্ভব? তার উত্তর অবশ্যই সম্ভব। কারণ,,ভারতবাদী দলহীন স্বাধীন গণতন্ত্র গঠন হবার পর,সারা দেশের যাবতীয় ভূসম্পত্তি, কল-কারখানা ইত্যাদি স্থাবর,অ-স্থাবর সম্পত্তির এক মাত্র মালিক হবেন ভারতমাতা,। এবার নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না ভারতমাতার এই সমুদ্র সম সম্পদের দু'চার ঘড়া খরচ করলে, সমুদ্রের কিছুই যায় আসে না। (চলবে)

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page