top of page

কবিতাগুচ্ছ

পোশাক -সেখ সাহিদ স্বর্গদ্বারের বাইরে লাইন...নানারকম পোশাক পরে আছে লোকজন,কেউ পরেছে গেরুয়া বস্ত্র,হাতে রুদ্রাক্ষের মালা আর অন্য হাতে পথের দিশারী গীতা...কারোর মাথায় টুপি হাতে পবিত্র কোরান...কারোর গলায় যীশুখৃষ্টের ক্রস,আর হাতে রয়েছে বাইবেল!তারা সবাই একটা লাইনে দাঁড়িয়ে... আর একটা লাইন আছে,সেখানে এখনো কেউ এসে পৌঁছোয়নি...ফাঁকা লাইন নিয়ে সবার কৌতূহল! তারপর কয়েকটা লোক মুখে একটা আলতো হাসি নিয়ে সেই ফাঁকা লাইনে এসে দাঁড়ালো,তাদের গায়ে কোনো পোশাক নেই,তারা সবাই উলঙ্গ... অন্য লাইনের লোকজন শুরু করলো অট্টহাসি! একটা আকাশবাণী শোনা গেলো,"জন্মের পর ধর্মের নেশায় ডুবে ধর্মের পোশাক পরা ভীষণ সহজ, কঠিন হলো মনুষ্যত্বের পোশাক পরে মানুষ হয়ে ওঠা...ধর্মের নেশা বড়ো নেশা,এই মোহে আটকে পড়লে নিজের অজান্তেই মনুষ্যত্ব লোপ পায়...তখন আর যাইহোক না কেন মানুষ হয়ে ওঠা আর হয়না! কিছুজন হয়তো পারে,তাদের ডাকনাম হাজারটা,শুধু কেউ মানুষ বলেই তাদের ডাকেনা...ধর্মের পোশাক পরতে বারণ করছি না,তবে পরাটা কী খুব জরুরি? জন্ম নিলে মানুষ হয়ে তাহলে মানুষ হয়েই মরতে ক্যানো পারোনা! মৃত্যুর পর কী হবে একমাত্র আমি জানি তোমরা কেউ না,মানুষ হও আগে ধার্মিক না..." অট্টহাসি থেমে গেল পোশাক পরা লোকজনের...পোশাক না পরে আসা উলঙ্গ লোকগুলোর মুখে তখনও আলতো হাসি লেগে আছে,সেই প্রথমের মতোই...। .................................... মহান অন্তর -স্বভাব কবি বৃন্দাবন ঘোষ

শুধু আফসোস আমার ই কি তোমার আফসোস নয়। তুমি কি তেমন ই চিন্তা কর না হতাশা যাতে হয়। আমি মনে করি লুকাও বিষয় কথা বলছি সঠিক যদি এ না তুমি স্বীকার কর জানাব তোমায় ধিক। স্বীকার না করে গোপনে অশ্রু ঝরিয়ে বল কি লাভ তার থেকে বলি সাহস করে এস দুজনে জমাই ভাব। ওটা বিরাট মহৎ কাজ হবে আমাদের দুজনের, দুজনের বাসনা হবে পূরণ ভালো কাজ হবে ঢের। আমার আফশোস থাকবে না তোমায় কাছে পেলে, দুহাততুলে নৃত্য করব আমার বাড়িতেএলে। তাই অযথা দেরি কেন সোনা তাড়াতাড়ি চলে এসো, তোমার মহানঅন্তর দিয়ে আমায় ভালোবেসো। ................................. সঠিক পথ -তাপসী ভট্টাচার্য্য অহংকারের দোলায় দুলে দেখে‌ সবই আলো সবার চেয়ে সব কিছুতে দেখায় সবই ভালো ভালোর চেয়ে অধিক ভালো আরো অনেক আছে যে বোঝেনা এ কথাটি সে তো রবে পিছে ছোটো থেকে অনেক ছোটো বড়োর চেয়ে বড়ো নিখুঁত চিন্তা সঠিক ভাবনা চিন্তা সবাই করো কেউ ছোট না, কেউ খারাপ না ভাবনা থাকুক মুলে রাগ হিংসা অহংকারের ঝুলিটি দিয়ে ফেলে মানব জীবনে সঠিক পথটি যদি না নিই বুঝে মানুষ,পশু হয়েই বিশ্বে জীবন হবে মিছে।


............................................ অপমান -মধুমিতা রায় চৌধুরী মিত্র অসংখ্য যোগ বিয়োগ-- হয়ে চলেছ অবিরাম! ভগবান তুমি কবে নেবে খানিক বিশ্রাম? অসংখ্য কলঙ্কের ক্ষত-- আজ যায় কেবল দেখা! ভগবান, তুমি ছাড়বে কবে ভিক্ষা করা? অপেক্ষারা হয়েছে আজ উপেক্ষিত-- ভুলেছি আজ সব অভিমান! ভগবান, তুমি কবে বাড়াবে এই অপমানের ব্যবধান? ভুলে যেতে চাই, আজ সব ক্ষতের যন্ত্রনা! ভগবান, তুমি পারবে কি মেটাতে, অপমানিত মনের সকল জ্বালা? কলকাতা তারিখ:- ০৬.০১.২০২১ অমোঘ প্রেম -সূরজ নন্দী কালো মেঘের লাল আকাশের নিচে, জলের ফেনা রসায় তীরের বালি। লাল কাকড়ার গর্ত ওঠে ভরে.. ঝিনুক ছড়ায় দুঃস্বপ্নের মালি। দূর নৌকার আবছা পালের ছায়া, গর্জে সাগর বাতাস সোঁ সোঁ বয়। সব নির্জন তবুও প্রাণস্পন্দে... শূন্য থেকেও শূন্য কিছুই নয়। শব্দ হারা গম্ভীর রূপে স্তব্ধ, অবাক-পৃথিবী ক্ষিপ্ত ধ্যানের শিখায়। ভিজা বালিটায় ও-কার পদচিহ্ন? করেছে প্রকাশ বেদনার লেখায়। পরনের সাদা বসনের শেষ প্রান্ত, সশব্দে ধায় দূর বাতাসের সঙ্গে, ভাবলেষহীন মুখে ভেজা দুটি চোখ, বিরহিত মন কাঁদে সাধারণ ভঙ্গে। কী বিপুল এক প্রকৃতি প্রমাণ শোক, তাপিত হৃদয় বয়ে ফেরে তার ভার, এমন প্রেমেতে বাঁচা নয় খুব সোজা, সত্তা শুন্য হেন প্রেম সম্ভার। হঠাৎ সূর্য শেষের রাঙা প্রলেপে.. প্রেমের আগুনে ভরালো সিঁথির ক্ষয়। মনে আছে প্রেম প্রেমে আছে প্রাণপ্রিয় দেহ অবসানে প্রেম অবসান নয়। বাহুবল -প্রদীপ চক্রবর্তী। ধর্ম নিয়ে নাচছি সবাই দেখাচ্ছি যে বীরত্ব, ভুলে যাচ্ছি মানবতা বাড়ছে কেবল দুরত্ব। ভাগ্য গড়ে মানুষ নিজেই যুক্তিবাদী গ্রহ, নক্ষত্র কে পাক দিয়ে যায় উপগ্রহ সহ। বিজ্ঞান কে আপন করে চল এগিয়ে যাই, বাহুবল কে সাথী করে সাফল্য টা পাই। ................................... আদর্শবান হও, চরিত্রবান হও। -গোবিন্দ মোদক বেড়িও না টই টই! তার বদলে পড়ো রে বই! মোবাইল গেম বাদ দাও। তার বদলে মাঠে যাও! টিভি সিরিয়াল দেখো নাকো। তার বদলে পড়ায় থাকো! ভিডিও গেম? বাদ দাও। তার বদলে হাঁটতে যাও! বেলা করে উঠো না। তার বদলে শরীরচর্চা! বেশি রাত করে ঘুম নয়। ভোরে ওঠা সহজ হয়! ফাস্টফুড সামলে খাও। জলখাবারে মন দাও! চকলেট-আইসক্রিম কম খাও,শাক-সব্জিতে মন দাও! হেডফোনে গান বাদ দিলে, মাথা ব্যথা হবে না ছেলে! তোমরা দেশের ভবিষ্যত। তোমরা আনবে নতুন পথ! তাই জীবনে আদর্শ চাই। চরিত্রটা গড়ো রে ভাই! চরিত্রবান যারা-ই হয় --- তারা-ই করে জীবন জয়!!


.......................................

জাতির গ্রহণ

-শ্রীকুমার মন্ডল


সত্য সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ,

হাজার বছর পরেও জাতি বুঝলনা অবশেষ।

রাহু খায়নি, কেতু যায়নি,

চাঁদ এসেছিল মাঝে

পৃথিবীতে তাই দেখা যায়নি পুরো সূর্যের face,

জাতি বুঝলনা অবশেষ।

কে জানে এরা বোঝে কোন ভাষা,

কাটেনি এখনো অফিমের নেশা,

যুগ যুগ ধরে সেই চলে আসা জাত মূর্খের দেশ, জাতি বুঝলনা অবশেষ।

গ্রহণের কালে, খাইলে পরে,

ভাইরাস নাকি উথলে পড়ে,

অতিবেগুনির অপবিজ্ঞানও চলে বাজারে বেশ, জাতি বুঝলনা অবশেষ।

বিজ্ঞানকে মাড়িয়ে পায়ে

জ্যোতিষ এসে আগামী কয়।

বোঝেনা কি জাতি, বিজ্ঞান ছাড়া আগামীর আলো শেষ?

নাঃ, জাতি বুঝলনা অবশেষ।

বিজ্ঞান ফেলে জ্যোতিষ ভাঁটি

আম না খেয়ে চুষল আঁটি,

সাইন্সের ছেলে গোবর ঘাঁটি গর্ব ফলায় বেশ।

জাতি বুঝলনা অবশেষ।

সাইন্সে আমার পড়ছে ছেলে

গলায় মস্ত পৈতা ঝোলে

উপনয়ন আর বর্ণবাদও মাথায় ঢুকেছে বেশ

আর জাতিগত বিদ্বেষ।

পৈতা দিয়ে চিন্তা বাঁধা

বানিয়েছি এক আস্ত গাধা

শিক্ষিত ছেলে বয়ে নিয়ে চলে, মধ্যযুগের ক্লেশ।

অলীক অহংকারের ক্লেশ।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য বাদে

মন্দির, মজিদ ভাগ্যে মাতে

কে জানে এরা কাকে যে ডাকে, আসেনা তো এক লেশ!

তবু ভক্তরা মাতে বেশ।

চল গে সব হুজুগে মাতি

হুজুরেরা সব মারবে লাথি

মানুষের চেয়ে ম্যা ম্যা ডেকে হব একপাল মেষ

না না বুঝলনা অবশেষ।

গড্ডালিকার ছন্দ ধরে

অন্ধ হয়ে অন্ধকারে

অনুকরণের বিষোদগারে হবে জীবনের শেষ।

বাকি থাকবেনা অবশেষ।

চাঁদ সূর্যের সমাপতন,

হাজার বছর গেলেও মদন

বোঝেনা, তবু সখ করে বলে, হারাবেই চীন দেশ।

হাইস্যকর! হাইস্যকর!

জাতি তবু বুঝলনা অবশেষ।

দশ হাতে দশ আংটি পরে,

ভাগ্য গ্রহ ফেরাবে বলে,

জাতি তবু হবে আত্মনির্ভর, নাটকের এক শেষ।

জাতি বুঝলনা অবশেষ।

এই কি বিজ্ঞান মনস্কতা?

Sir এর মুখের কেতাবি ভাষা।

নিজেই তো sir মূর্তি দেখলে প্রনাম ঠোকেন বেশ।

জাতি বুঝলনা অবশেষ।

আই আই টি, আই আই এস

ডিগ্রিধারীর বিজ্ঞানী ভেশ

কুসংস্কার ছড়িয়ে বেড়ায় ISRO থেকে space,

সায়েন্স, ঘৃতাহুতিতেই শেষ

জাতি বুঝলনা অবশেষ।

বিবেকানন্দ, মঠ ও মিশন

মাদ্রাসারও প্রভাব ভীষণ

শিক্ষার সাথে অপবিজ্ঞানও, দেখে শিশু অনিমেষ।

এরা জাগবেনা অবশেষ।

গেরুয়া, সাদা নানান রঙে

বাবা গুলো সব সাজছে ঢং এ

লাইন দিয়ে চ্যালা বন্ধকী দেয় সেরিব্রাল কর্টেক্স।

ভক্ত বোঝেইনা অবশেষ।

কেউ তো আবার সাজে "নাস্তিক",

গড্ডালিকার ট্রেন্ডে ভাসতে।

নাস্তিকতা কী এতই সস্তা, ফ্যাশান মারার কেস?

আরে বিশেষ্য নয় বিশেষণ,

এটা বুঝলনা অবশেষ।

God, আল্লা, ঈশ্বর খেলা

সব খেলাতেই এই জাতি সেরা

খিদে পেট শিশু ধর্মই গেলে।

পলকের উন্মেষ?

সে ও ঘটবেনা পরিশেষ।

না না, সত্যিই সেলুকাস, গ্রহণ লেগেই আছে বেশ

আগামী হাজার বছরেও জাতি জাগবেনা অবশেষ,

এই জাতি বুঝবেনা অবশেষ।




0 comments

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page