লিখেছেন- মোনালিসা
বাড়িতে নাস্তিকতা নিয়ে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ চলে আমার সাথে মা বাবা সহ বাকিদের।
ছোটবেলায় বাড়ির সকলের ঠাকুর ভক্তি দেখে দেখে আমিও যন্ত্রের মত পুজো করতাম।কত কি চাইতাম।এখন সেইসব ভাবলে হাসি পায়।
আমার মতের পরিবর্তন হতে শুরু করে ২০১২ সাল নাগাদ। যে বছর পার্ক স্ট্রিট রেপ কেস টা ঘটে।এই ঘটনাটা আমার বিশ্বাসে প্রথম কুঠারাঘাত ঘটায়।তার পর দিল্লির ঘটনা ঘটলো। মেয়ে টাকে যখন সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হলো আমি মনে প্রাণে প্রার্থনা করেছিলাম পুজো করেছিলাম যে তোমরা ওকে বাঁচিয়ে দাও।
নাহ আমার কথা ঠাকুর শোনেনি। যার কান নেই যার প্রাণ নেই সে আর শুনবে কি করে।সেই দিন আমি প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয়েছিলাম।আমি আর কখনও কোনোদিন কোনো পাথর খন্ডকে মানবো না।এবং বাড়ির লোককেও বলেছিলাম। যথারীতি তারা আমার মুখ বন্ধ করেছে,আমায় বকাঝকা করেছে।আমি আমার বিশ্বাস থেকে সরে আসিনি আজও।
আর যেহেতু বাড়িতে সবাই পুজো করে আমি একা এসব মানিনা।তাই বাড়ির লোকের সাথে প্রায় অশান্তি লাগে।
বাট লাগে লাগুক।যেটা ভুল সেটাকে মেনে নিয়ে নিজের কাছে ছোট হওয়া সম্ভব নয়।
আর একটা ব্যাপার সালটা ছিল ২০১২।তার পরের বছর আমার উচ্চমাধ্যমিক ছিল।যেহেতু বাড়িতে নাস্তিকের মত কথা বলছি,যুক্তি দেখাচ্ছি সরস্বতী পূজায় অঞ্জলী দেবনা,উপোস করবো না বলছি বাড়ির লোক আমায় বলেছিল তুই এরম করছিস তো Hs ভালো হবে না। গ্রাজুয়েশনে ভালো ফল হবে না।এই সবও শুনতে হতো,পরীক্ষা খারাপ হওয়ার ভয় দেখাতো।আমি ওদের শুধু একটা কথাই বলি।তোমাদের ভগবান মেয়েটার জীবন শেষ করে দিল কি করে।তোমরা তো বলো তোমাদের ভগবান সবার মঙ্গল করে।তবে ওর ক্ষেত্রে এটা কি হলো।এইসব প্রশ্নের উত্তর নেই তাদের কাছে জানি।যাই হোক তারপর
আমি নিজের চেষ্টায় দেখিয়ে দিয়েছি ওদের, ভগবানের পায়ে মাথা না ঠেকিয়ে ও নিজের ইচ্ছাশক্তি,আত্মবিশ্বাসের জোরে সব কিছু সম্ভব।পাথরে না বিশ্বাস করে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখাটা অনেক বেশি প্রয়োজন।
আমি কেন নাস্তিক হলাম (২)
লিখেছেন- বিতান সানা
আমার নাস্তিক হওয়ায় পেছনে আমার বাবার অবদান আমি অস্বীকার করতে পারিনা। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তিনি বুঝিয়েছেন এই পৃথিবীর সবকিছুই একটা নির্দিষ্ট গতিতে ঘটছে। কিভাবে সেটি ঘটছে, সেটা বিজ্ঞান ব্যাখা করেছে। বানর থেকে আদিম মানুষ আর তারপর আজকের এই আমরা, এটা সবটাই ঘটেছে বিবর্তনের ওপর ভর করে, অলৌকিক কিছুর জন্য নয়। ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে নিরীশ্বরবাদের পরিবেশ ছিলো।
ছোটবেলায় আমার হাতে খড়ি হয়নি, এমন কি আমি সরস্বতী পুজোর আগেই কুল খাওয়া পছন্দ করতাম। বাড়িতে নিষেধ ছিলোনা, এমন কী সরস্বতী পুজোর দিন পড়াশুনাও করতাম। বাড়িতে কোনো ঠাকুরের ছবি ছিলো না, আজও নেই। বাবাকে মাকে কোনদিন বাড়িতে বা মন্দিরে গিয়ে পুজো করতেও দেখিনি। এই সবকিছুই আমার ওপর গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। একটু বড়ো হয়ে যখন মার্ক্সবাদ পড়েছি, গভীরে গেছি, জেনেছি ঈশ্বর, আল্লাহ সবই ক্ষমতাবান শ্রেণীর তৈরি, যা দিয়ে তারা দুর্বল শ্রেণীকে শোষণ করে। প্রতিটা ঘটনাই আমাকে বারবার বুঝিয়ে দিয়েছে ঈশ্বর, আল্লাহ বলে আসলেই কিছু নেই, সবটাই আসলে কিছু মানুষ ক্ষমতার সিংহাসনে বসে কাঠি নাড়ছে। আমরা তাদের অঙ্গুলিহিলনে চলছি মাত্র।
একদিন বাবার বুক সেল্ফের পুরোনো বই ঘাটতে ঘাটতে প্রবীর ঘোষের বই পেয়েছিলাম, " অলৌকিক নয় লৌকিক ২য় খন্ড"। ব্যাস, এরপর সবকটি খন্ড জোগাড় করে গোগ্রাসে গিলেছি। " যে কটি doubt ছিলো, তাও ধুয়ে সাফ হয়ে গেল প্রবীর ঘোষকে পড়ে। সমস্ত কিছু বিচার করে বুঝলাম স্বর্গ, নরক, আশীর্বাদ, অভিশাপ, আগের জন্ম, পরের জন্ম সবই মানুষের বানানো ভ্রান্ত ধারণা। আমরা চাইলেই আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারি, তাও আবার গ্রহ, রত্নের পাথরের আংটি না পরেই। দরকার উপযুক্ত বিজ্ঞানমূলক, যুক্তিমূলক শিক্ষা, বিপরীত মতের সম্মান করার মানসিকতা আর সমাজের প্রচলিত সমস্ত সত্যের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার সাহস।
ফিচার: ২
ওজন কমাতে লেবুজল?
লিখেছেন- শুভায়ু দাস
জামা পেটে গিয়ে আটকে যাচ্ছে ? ডাক্তার ক্রমাগত ওজন বৃদ্ধির লাল সংকেত দিয়ে যাচ্ছেন ?
পাশের বাড়ির মুখুজ্জে দা কি বলছে লেবু দিয়ে গরম জল কিম্বা শুধু গরম জল খেতে,এক্কেবারে এক হপ্তায় কিলো দশেক কমবেই!
আজ্ঞে না ওজন এইভাবে কমে না আর একটু ঠিক করে বললে চর্বি এভাবে কমে না। চর্বি কমানোর জন্য দরকার ক্যালোরিক ডেফিসিট। গোদা বাংলায় বললে আপনার প্রতিদিনকার প্রয়োজনীয় ক্যালোরির তুলনায় কম ক্যালরির খাদ্যাভাস। সঠিক অনুপাতে প্রয়োজনীয় macronutrient(প্রোটীন কার্বোহাইড্রেট ফ্যাট) ও micronutrient (ভিটামিন মিনারেল) খাদ্যাভাসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে তবেই ওজন কমানো সম্ভব। তবে গরম জল কিংবা লেবুর কি কোনো উপকারিতাই নেই! লেবু তে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে এছাড়া গরমজলের সাথে লেবু খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে এবং মলত্যাগ পরিষ্কার হয়। সুতরাং গরম জল এবং লেবু সেবন আপনার নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের অঙ্গ করে তুলুন। তবে, ওজন কমানোর জন্য ক্যালোড়িক ডেফিসিট-ই আপনার গন্তব্য।
Comments